মোঃ মিজানুর রহমান মিলন
রংপুর বিভাগীয় প্রধান
গাইবান্ধায় তিন জন কেসিনো সম্রাটের বিরুদ্ধে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তারা মাত্র ১০/১২ দিন করে গা ঢাকা দিয়ে থেকে আবার শুরু করেছে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জমজমাট কারবার। এবার খোকন ও শিবুর সাথে যুক্ত হয়েছে ফিরোজ কবির, আঃ আজিজ ও সোহেল নামের তিন কেসিনো সম্রাট। তারা পুনরায় স্থান পরিবর্তন করে দ্বিগুণ উৎসাহে বীরদর্পে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকদের সর্বশান্ত করার কার্যক্রম চলিয়ে যাচ্ছে। এলাকার সচেতন মহলের অভিযোগ গাইবান্ধার সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করছে!
গাইবান্ধা জেলা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের কাজলঢোপ গ্রামের দিনমজুর মোহাম্মদ আলীর ছেলে খোকন মিয়া এবং তালুক মন্দুয়ার গ্রামের দিনমজুর কান্তি ভুষন ও মানুষের বাড়িতে ঝি’র কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা শ্রীমতি ভানুরানী দম্পতির পুত্র গ্রামে গ্রামে ফেরি করে চুরি ফিতা বিক্রি করা ফেরিওয়ালা শুভজিৎ বর্মন শিবু মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই জিরো থেকে হিরো হওয়ার নাতিদীর্ঘ খতিয়ান সম্প্রতি পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়।
এদিকে, খোকন ও শিবুর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর তারা দুই জনেই সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের নজর এড়াতে সুকৌশলে মাত্র ১০/১২ দিন গা ঢাকা দিয়েছিলেন । পরে পুনরায় তারা বীরদর্পে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে আরো তিনজন কেসিনো সম্রাট। তারা হলেন ফিরোজ কবির, সোহেল মিয়া ও আঃ আজিজ। ফিরোজ কবির ও সোহেল মিয়ার বাড়ি শিবুর বাড়ি সংলগ্ন তালুক মুন্দুয়ার গ্রামে। যা তালুক মন্দুয়ার গ্রামস্থ শিমলার তল নামক স্থানে এবং ওই শিমলার তলের উত্তর পাশে। আঃ আজিজ এর বাড়ি সাদুল্যাপুর উপজেলার শহরতলী হামিন্দপুর গ্রামে। তার বাবার নাম সাদেক আলী।
সম্প্রতি খোকন ও শিবুর জিরো থেকে হিরো হওয়ার নাতিদীর্ঘ খতিয়ান পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। ফলে খোকন ও শিবু দুজনেই ১০/১২ দিনের জন্য গা ঢাকা দেন। সম্প্রতি খোকন সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের নজর সুকৌশলে অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য তার বাবার পৈত্রিক ভিটা বাদে সাদুল্লাপুর-গাইবান্ধা সড়কের পাশে কদমের তল নামক ছোট্ট মোড়ের পাশে সড়ক ঘেষে উচ্চমূল্যে কেনা জমিতে কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা আলিসান বাড়িটি বিক্রি করবেন বলে জানা গেছে। তবে এলাকায় তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলা প্রভাবশালী নেতারা বিক্রির খবরটি এলাকায় প্রচার করছেন।
সরোজমিনে জানা জানায়, খোকন, শিবু, ফিরোজ কবির, আঃ আজিজ ও সোহেল মিয়া তাদের নিজ নিজ অবস্থান পরিবর্তন করে পাঁচ জনেই একত্রিত হয়ে সাদুল্যাপুর থানার মাত্র এক’শ গজ পশ্চিম পাশে মোড়ে শিবুর কসমেটিকস এর দোকানে বসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করিয়া আসিতেছে।
আরো জানা যায় সাদুল্যাপুর থানার পাশে অর্থাৎ পুলিশের নাকের ডগায় বসে তারাএই কেসিনো ব্যবসা চালাচ্ছে। এই গ্রুপের মধ্যে কেসিনো সম্রাট, খোকন, শিবু, আঃ আজিজ, সোহেল ও ফিরোজ কবির বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ করে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে থাকেন তারা। আর এ সুযোগে অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো সম্রাট শিবু, খোকন, সোহেল, ফিরোজ কবির ও আঃ আজিজ গোপনে অল্প টাকায় বেশী টাকা পাওয়ার লোভ দেখিয়ে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসে দিকে নামিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা।
ধুরন্ধর মহিলা শ্রীমতি ভানু রানী নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কৌশলে ছেলে শিবুকে দিয়ে প্রথমে নকল কয়েন, নকল ডলার এর ব্যবসা শুরু করেন। কিছুদিন পর খবর পেয়ে গাইবান্ধার সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভানু রানী ও ছেলে শুভজিৎ বর্মন শিবুকে তুলে নিয়ে যায়। তবে রহস্য জনক কারণে তাকে বেশিদিন জেলে থাকতে হয়নি। ফিরে এসে আবার শুরু করেন পূর্বের এই কেসিনো ব্যবসা। পরে ব্যবসা বাড়িয়ে বনে যায় কেসিনো ডিলার। একই সাথে গড়ে তোলেন ঢাকা, গাজীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি গাইবান্ধা সদর, সাদুল্যাপুর ও গোবিন্দগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক। এতে অন্যান্য ডিলার সহ শ্রীমতি ভানু রানী ও তার ছেলের ভাগ্যের পরিবর্তন হতে থাকলেও এতে ধ্বংস হয় এলাকার শত শত যুবক। তাদের অনেকেই একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যান বটে কিন্তু গড়ে উঠে শিবু, ফিরোজ, আঃ আজিজ, সোহেল সহ অন্যান্য ডিলারদের টাকার পাহাড়।
আরো জানা যায়, এলাকাসহ প্রশাসনিক ঝুট ঝামেলা ঠেকানোর জন্য কেসিনো ডিলাররা তাদের নিজ নিজ এলাকায় বেশ কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজনকে সেট করেছে। এই কেসিনো ডিলারদের বিষয়ে কেউ কোন কিছু অনুসন্ধান করতে গেলে বা খোঁজ খবর করলে উল্লেখিত সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন এগিয়ে এসে কেসিনের সম্রাটদের প্রশংসা করে থাকেন।
এ ব্যাপারে সম্প্রতি সাদুল্যাপুর উপজেলার শহরতলী হামিন্দপুর গ্রামে আঃ আজিজ এর মতামত জানতে তার বাড়িতে গেলে আঃ আজিজ তাৎক্ষণিক ভাবে সন্ত্রাসী প্রকৃতির এক যুবককে মোবাইল ফোন করে ডেকে আনেন। এ সময় সে এসে আঃ আজিজ এর পক্ষ নিয়ে হম্বিতম্বি ভাব দেখায়, যেন আঃ আজিজ ধোয়া তুলসী পাতাএ বিষয়ে গাইবান্ধার সচেতন মহল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।