বাদল আহাম্মদ খান নিজস্ব প্রতিবেদক, আখাউড়া
নিজের সম্পত্তি ফিরে পেতে ও প্রভাবশালীদের হাত থেকে রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা পৌর এলাকার খাড়পাড়ার সাঈদা সুলতানা প্রিয়া নামে এক নারী। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাঈদা সুলতানা জানান, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মো. ইলিয়াছ ও তার তার ভাই মো. জাহাঙ্গীরের ভূমি দখলসহ নানা অত্যাচারে এক ধরণের মানসিক পীড়া নিয়ে বসবাস করছেন। তাদের অত্যাচারের এতটাই নিষ্পেষিত রীতিমতো এলাকাছাড়া হয়ে আছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর আইনশৃংখলা বাহিনীর নমনীয়তার সুযোগে ৭ আগস্ট থেকে মো. ইলিয়াস ও তার ভাই আমার জায়গা জবর দখল শুরু করে। খাড়পাড়ার ওই জায়গাটি শশুরের মাধ্যমে আমার স্বামীর ওয়ারিশ সূত্রে মালিক আমি। জায়গা দখলের খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেলে ইলিয়াস ও জাহাঙ্গীরের বাহিনী আমার উপর চড়াও হয় এমনকি হত্যার হুমকি দেয়। এরপর থেকে আমি নিরাপত্তারও অভাববোধ করছি।
তিনি বলেন, ‘আমার দাদা শশুর নূরল আলম বিএম ইঞ্জিনিয়ার এর দুই স্ত্রী। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কর্মস্থল পাকিস্থানের করাচিতে চলে যান। সেখানকার করাচীতে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানেই রওশন আরার পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ে নাছরিন আলম, ছেলে মনজরুল আলম, মাসুদ আলম ও মহসনি আলম জন্মসূত্রেই পাকিস্থানে বসবাস করতে থাকেন। আমার দাদা শশুর মৃত্যুর আগেই সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বন্টন করে দেন। এরই আলোকে দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরাসহ তার সন্তানের পাকিস্থানের একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ সকল সম্পত্তি পান। অন্যদিকে প্রথম স্ত্রী ও তার তিন সন্তান মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম ও মোর্শেদ আলমকে বাংলাদেশের সকল সম্পত্তি বুঝিয়ে দেন। এরই সূত্র ধরে আমার শশুর আনোয়ারুল ইসলামের হিস্যা হিসেবে আমার স্বামী সামশুল আলম কাউছার কিছু সম্পত্তি পান। আমার শশুরের স্ত্রী অর্থাৎ শাশুরি, পাঁচ মেয়েও অনুরূপভাবে সম্পত্তি পেয়েছেন। এরই সূত্র ধরে ২০১৪ মালের একটি দলিল মূলে আমি ও আমার সন্তানেরা ৩.৮০ একর জমির মালিক হই। কিন্তু পাকিস্থানের নাগরিক প্রয়াত মঞ্জুুরুল আলমের ওয়ারিশদের কাছ থেকে কিছু সম্পত্তির ‘পাওয়ার’ নিয়ে পুরো জায়গা দখলে নিয়ে নেন জাহাঙ্গীর।
তিনি জানান, মঞ্জুরুল আলম আলম বাংলাদেশি নাগরিক নয় মর্মে আদালত সন্দেহ পোষণ করে। তার নাগরিকত্ব প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত আদালত মামলাটি স্থগিত রাখে। তবে সম্প্রতি জায়গা নিয়ে হওয়া অভিযোগের পর স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করেন আদালত।
তিনি জানান, ওই সময়ে পৌর মেয়রের দায়িত্বে থাকা মো. ইলিয়াছ এক প্রত্যায়ন পত্রে উল্লেখ করেন যে মঞ্জুরুল আলমসহ তাদের পরিবার যে বাংলাদেশে থাকেন না সেটি নিশ্চিত করেন। পরে অবশ্য মঞ্জুরুল আলম বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বানায়।
সংবাদ সম্মলেন উপস্থিত মো. হারুণ নামে কসবার ব্যক্তি জানান, সাঈদা সুলতানার কাছ থেকে আমি কিছু জায়গা কিনেছি। ওই জায়গাটাও দখল করে ফেলা হয়েছে। আমি জানতে চাইলে বলে তারা নাকি জায়গার মালিক।