রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লীতে পারিবারিক ও জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাতীয় পার্টির নেতা জাবেদ আলী ও সাঙ্গপাঙ্গরা এমদাদ হোসেন নামের এক কৃষকের বাঁশ বাগান, পুকুর ও আবাদীর জমির সামনে ঘেরা দিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এতে করে ওই কৃষকের প্রায় সাত বিঘা জমি দীর্ঘ এক বছর ধরে অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয়ভাবে শালিসী বৈঠক ও থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রকার প্রতিকার না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন কৃষক এমদাদ হোসেন । অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের কুতুব্বাস গ্রামের মৃত বাবার আলীর ছেলে এমদাদ হোসেন অংশীদারী ও ক্রয় সূত্রে কুতুব্বাস মৌজাধীন খতিয়ান নং- এসএ ৬২, আরএস ১৪৬, দাগ নং- এসএ ৩১৯, ৪২৬, ৩৩২, ৩৩৩, ৩২৮ ও ৩২৯/৩৩০, আরএস ৪৩২, ৪৮১, ৪৮৯, ৪৯০, ৪৯৫ ও ৪৯৬ ভূক্ত ০১ একর ৯৪ শতক জমির মালিক।
দীর্ঘ দিন ধরে চাষাবাদ করে আসতে থাকাকালে এক বছর আগে ওই জমির উপর নজর পড়ে স্থানীয় কৈকুড়ী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক কুতুব্বাস গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে জাবেদ আলী ও তার ভাইদের। তারা পারিবারিক
ও জমি-জমা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করে কৃষক এমদাদ হোসেনের মালিকানাধীন জমি জবর দখলের জন্য চেষ্টা চালাতে থাকে এবং ওই জমির সামনে ঘেরা দিয়ে বেআইনীভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।
এতে করে চাষাবাদ ও পরিচর্যার জন্য যেতে না পারায় দীর্ঘ এক বছর ধরে অনাবাদী পড়ে আছে এমদাদ হোসেনের মালিকানাধীন ০১ একর ৯৪ শতক জমি। তিনি স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে ওই ঘেরা অপসারনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন, কিন্তু পুলিশ প্রশাসন এব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। এধরনের কর্মকান্ড কৃষকদের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়ে স্থানীয় কৃষকরা এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবী করেন, অবিলম্বে কৃষক এমদাদ হোসেনের জমির সামনে থেকে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নেয়া হোক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক। তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, এব্যাপারে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, যাতে কৃষক এমদাদ হোসেন তার জমিতে স্বাভাবিকভাবে যাওয়া-আসা করতে পারেন এবং কৃষিকাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
এমদাদ হোসেন বলেন, আমার জমি এখন অবব্যহৃত। জাপা নেতা জাবেদ আলীর দেয়া ঘেরা অপসারন করা হলে আমি ও আমার পরিবার
চরম ক্ষতির শিকার হব। এব্যাপারে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।
জাপা নেতা জাবেদ আলী বলেন, তিনি কারও জমি জবর দখলের চেষ্টা এবং চাষাবাদে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেননি। নিরাপত্তার জন্য নিজের জমিতে ঘেরা দিয়েছেন। এতে কারও কোন সমস্যা হলে তার করার কিছু নেই ।
কৈকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর আলম বলেন, তিনি স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বিষয়টি নিরসনের জন্য চেষ্টা করেছেন। কোন পক্ষই রাজি না হওয়ায় সমাধান করতে
পারেননি।
পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ নুরে আলম সিদ্দিকি এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একজন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন বলেন, এব্যাপারে এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তিনি, যেকোন কৃষকের জমির সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চাষাবাদ করতে না দেয়া বেআইনী উল্লেখ করে বলেন বিষটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ
মোঃ আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী স্টাফ
০১৮৯৩৪৭৭৩১১ রিপোর্টার