বাদল আহাম্মদ খান নিজস্ব প্রতিবেদক, আখাউড়া
ময়মনসিংহের আঠারবাড়ি এলাকায় যাওয়ার জন্য ট্রেনে চড়তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে আসেন মো. হাফিজ নামে এক যুবক। কথা হলে বললেন, ‘ভৈরব নাগাদ একটি ট্রেনে গিয়ে সেখান থেকে বদল করে কিশোরগঞ্জ হয়ে আঠারবাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা। কিন্তু ট্রেন না থাকায় আমি চিন্তায় আছি। কেননা, সড়ক পথে আঠারবাড়ি যেতে পর্যাপ্ত যে টাকা লাগবে সেটা আমার হাতে নেই।’
শুধু হাফিজ মিয়া নন, লোকো রানিং স্টাফদের আন্দোলনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাজার হাজার যাত্রীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জরুরি প্রয়োজনে যাদেরকে যেতে হয়েছে তারা বাধ্য হয়ে সড়ক পথ ব্যবহার করেছেন। অনেকে নানাদিক বিবেচনায় আবার যাত্রা বাতিল করেছেন। তবে চাকুরিজীবীদের মধ্যে যারা প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা, নরসিংদীতে অফিস করতে তাদের সমস্যা হয় বেশি।
এদিকে ট্রেন চলাচল না করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে থাকা ১০টি স্টেশনের ভ্রাম্যমাণ ও স্থানীয় অন্তত শতাধিক বিক্রেতা বিপাকে পড়েন। যাত্রী না থাকায় তাদের বিক্রি এক প্রকার বন্ধই ছিলো। আখাউড়াতে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাও আসেনি।
এদিকে আন্দোলনে পক্ষে সমর্থন জানিয়ে আখাউড়ায় দিনভর একত্রিত ছিলেন লোকো রানিং স্টাফ কর্মচারিরা। দাবি বিষয়ে তাদের নজর ছিলো টিভি ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে। স্থানীয় কার্যালয়ে বসে তারা দাবির পক্ষে সভা করেন ও শ্লোগান দেন।
মঙ্গলবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর পাঁচটায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলে বেলা সাড়ে নয়টার দিকে তিতাস কমিউটার ট্রেন আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের দুই নং প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে ছিলো। ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট পথের কোনো ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে চলাচল করেনি। অনেক যাত্রী এসে ফিরে গেছেন। কেউ কেউ অগ্রীম কিনে রাখা টিকিট ফেরত কিভাবে পাবেন সেসব বিষয় জানতে ভিড় করেছেন। কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে পারেন এ নিয়েও সংশ্লিষ্টদের কাছে অনেকে প্রশ্ন করেন।
লোকো রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ আখাউড়া সভাপতি মো. কবির আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোনো নতুন দাবি জানাচ্ছি না। আমরা চাই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে ভাতা আগে দেওয়া হতো সেটা অব্যাহত রাখা হোক। আমরা জানি এ আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের উপর অনেক চাপ আসবে। কিন্তু এখন আর আমরা পিছ পা হবো না।’