বিশেষ,প্রতিনিধিঃ মোছাঃলাবুনী আক্তার
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আয়োজিত জেএফএ কাপ অনূর্ধ্ব-১৪ নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং ইয়ুথ উইমেন্স ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-২০২৫ এর অংশ হিসেবে সারাদেশে খেলা শুরু হয়েছে। তবে গাইবান্ধা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের (ডিএফএ) কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ: অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন শরিফা অদিতি। যিনি নিজেকে ভিকারুন নেছা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক এবং বসুন্ধরা কিংস ক্লাবের ফুটবল কোচ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিনি গাইবান্ধা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের প্যাড জাল করে এবং বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের কাছে নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে (মাহামুদা খাতুন, অ্যাকাউন্ট নম্বর: ২০৫০৩৪২০২০১৭৩৫৬০০; ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বারিধারা শাখা, (রাউটিং নম্বর: ১২৫২৬০৫২৫) টাকা গ্রহণের জন্য চিঠি প্রদান করেন। এই বিষয়টি গাইবান্ধা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের অজান্তে করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া, শরিফা অদিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি গাইবান্ধার বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে অন্য জেলার খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করছেন। গাইবান্ধা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন জানায়, ডিএফএ গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন, অনুর্ধ-১৪ টিমের কোচ সুরুজ হক লিটন, সহকারী কোচ মোছা: হাবিবা, টিম ম্যানেজার আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ, গাইবান্ধা ফুটবল একাডেমীর পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দগঞ্জ ফুটবল একাডেমির রায়হান প্রধান, সাদুল্ল্যাপুরের সাবেক খেলোয়াড় কিশোর চন্দ্র যাদের উপস্থিতিতে বাছাইকৃত ১৮ জন খেলোয়াড়ের তালিকা থেকে প্রাথমিকভাবে ১৩ জন চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু শরিফা অদিতি এই তালিকা বাতিল করে অন্য জেলার খেলোয়াড়দের নিয়ে রংপুরে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা নিয়মবহির্ভূত। নিয়ম অনুযায়ী, অন্য জেলার খেলোয়াড় দলে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে কিন্তু সেই জেলার ছাড়পত্র ছাড়া খেলার অনুমতি মিলবে না। যে ঘটনাটা গাইবান্ধা বনাম পঞ্চগড় টিমের ক্ষেত্রে হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা ডিএফএ রেজিষ্ট্রেশন করা খেলোয়াড় বাদ দিয়ে বগুড়া, জয়পুরহাট এবং সাদুল্ল্যাপুরের খেলোয়াড়দের নিয়ে নির্ধারিত সময়ে এসএফসিএ টু স্টার গাইবান্ধা জেলার একমাত্র কোচ রফিকুল ইসলাম লুলু তার মনগড়া মতো খেলোয়াড় মাঠে নামানোর হাজার চেষ্টা করেও বাফুফে বাছাই কমিটি রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া খেলোয়াড় মাঠে নামতে দেয়নি বলে জানা যায়। ফলে পঞ্চগড় দল ফাঁকা মাঠে গোল করে বিজয় অর্জন করে
এদিকে, গাইবান্ধা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহিন জানান, শরিফা অদিতি গত জুন মাস থেকে গাইবান্ধায় আসেননি এবং দলের খেলোয়াড়দের কোনো খোঁজখবর রাখেননি। তিনি বাফুফের সভাপতির নাম ভাঙিয়ে এবং জেলা প্রশাসকের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট করেন, যা বিভ্রান্তিকর।
সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন জানান, গাইবান্ধা ডিএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ দলের কোচ হিসেবে সুরুজ হক লিটন, সহকারী কোচ হাবিবাকে করে এবং টিম ম্যানেজার হিসেবে আলহাজ আব্দুল হামিদকে নিয়োগ দিয়েছে। তারা খেলোয়াড় বাছাই করে বাফুফের বাছাই টিমের কাছে তালিকাও জমা দিয়েছেন। কিন্তু শরিফা অদিতি ফোনে হুমকি দিয়ে এই তালিকা বাতিল করার চেষ্টা করছেন
তিনি বলেন, শরিফা অদিতি অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলেদের দলের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৫,০০০ টাকা উত্তোলন করে নিজের কাছে রেখেছেন। এ বিষয়ে ডিএফএ কোনো পদক্ষেপ না নিলেও জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খেলা পরিচালনা করা হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের দাবি, শরিফা অদিতি বাফুফের রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই জেএফএ কাপে অংশগ্রহণের চেষ্টা করছেন, যা নিয়মবিরোধী। তারা এ বিষয়ে বাফুফের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
এই ঘটনা গাইবান্ধার ফুটবল সম্প্রদায়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা এই অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।